বাস্তবতা এবং জীবন ও জীবিকা খুবই নির্মম তার থেকেও বড় নির্মম গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম। প্রতি এক থেকে দুই বছর পর পর Grameen Bank এ জব সার্কুলার দেয়া হয়। বিশাল সংখ্যক আবেদনকারীর মধ্য থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভালো সিজিপিএধারীদের শর্টলিস্ট করে থাকে। গ্রামীন ব্যাংক মূলত এলাকাভিত্তিক বা জেলাভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম করে থাকে।
এক্ষেত্রে যাদের ভালো সিজিপিএ আছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ভালো সিজিপিএ বলতে ৩.২০+ বুঝানো হয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য,ভালো সিজিপিএধারীরা গ্রামীণ ব্যাংককে বেশিদিন সার্ভিস দিতে পারেনা। স্বইচ্ছায় চাকরি ছেড়ে চলে যায়।
গ্রামীন ব্যাংকে জব ক্যারিয়ার কেমন |
গ্রামীন ব্যাংক মূলত একটি এনজিও। ব্রাক যেমন একসময় এনজিও প্রতিষ্ঠান ছিল। এখনো আছে। গ্রামীন ব্যাংক তেমনই একটি এনজিও। গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চলে যাবার পরেও এটি টিকে আছে। তবে নানান বাধা ও প্রতিকূলতা মধ্যে টিকে আছে।
কারো কারো মতে গ্রামীণ ব্যাংক তার এমপ্লয়িদের চরম মানসিক নির্যাতন করে। সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে এই বিষয়টি ফুঁটে উঠেছে। এ ব্যাংকটি তার এমপ্লয়িদের বলদি অর্ডার দিয়ে যে নির্যাতন শুরু করেছে তা একমাত্র ভুক্তভোগী এমপ্লয়ি ও তাঁর পরিবার গুলো উপলব্ধি করতে পারছে। এমন একজন গ্রামীণ ব্যাংক এমপ্লয়িকে দু-তিন দিন ধরে খুব কাছ থেকে দেখছি যিনি কিনা তাঁর বদলির অর্ডার হাতে পাওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছে, সকাল সন্ধ্যা তিনি ও তাঁর পুরো পরিবার কান্নাকাটি করছেন! উনি মানসিকভাবে এতোটাই বিধ্বস্ত হয়েছেন যে উনি স্বাভাবিক ভাবে কথা পর্যন্ত বলতে পারছেন না, কথা বলার সময় কণ্ঠস্বর ভেঙে আসছে, ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারছেন না যা তাঁর বডি সাক্ষ্য দিচ্ছে! চল্লিশ উর্ধ্ব ওই ভদ্রলোক এতোটাই ভেঙে পড়েছেন যে বেশ কয়েকবার মুখে উচ্চারণ করেই ফেলছেন চাকুরীটা ছেড়ে দিবেন কিন্তু সংসার এবং জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনা করে এই মুহূর্তে চাকুরিটা ছাড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সহাস পাচ্ছেন না, নিজের মনের পুরো বিপরীতে গিয়ে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের নতুন কর্মস্থলে জয়েন্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন!!
একবার ভেবে দেখেন তো, প্রায় চল্লিশ উর্ধ্ব একজন ভদ্রলোক তাঁর পরিবার পরিজন ছেড়ে বর্তমান কর্মস্থল থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের সম্পূর্ণ নতুন একটি জায়গাতে, নতুন একটি পরিবেশে জব করা তাঁর জন্যে কতোটা চ্যালেঞ্জের! গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তারদের এমপ্লয়িদের কতোটা মানসিক নির্যাতন করে আশা করি আপনারা তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
আন্তর্জাতিকভাবে ৮ঘন্টা ওয়ার্কিং আওয়ার নির্ধারিত হলেও গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়ার্কিং আওয়ারের কোন সীমাবদ্ধতা নেই!! একজন গ্রামীণ ব্যাংক এমপ্লয়ি বছরের সব কয়টি ঋতুতেই সকাল সাতটায় অফিসের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে রাত ১০টায় ঘরে ফিরে, একজন মানুষের জন্যে এর থেকে বড় নির্যাতন আর কিসে হতে পারে, গ্রামীণ ব্যাংক এতোটা রক্তচোষা প্রতিষ্ঠান কেন!!
এই গ্রুপে যদি গ্রামীণ ব্যাংকের কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা নীতিনির্ধারক থেকে থাকেন তবে তাঁদের কাছে আমার বিনিত আহ্বান থাকবে, আপনা গ্রামীণ ব্যাংক এমপ্লয়িদের প্রতি এতোটা নির্মমতা প্রদর্শন করবেন না প্লীজ। একবার একটু মানবিক বিবেচনার জায়গা থেকে বিবেচনা করে দেখবেন, হঠাৎ বদলির অর্ডার হাতে পেয়ে নিজ পরিবার থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের কর্মস্থলে গিয়ে একজন এমপ্লয়ি তাঁর কাজে আদৌ কতোটা মনযোগী হতে পারবেন।
যাদের টার্গেট বিসিএস বা প্রাইভেট জব। তাদের হাতে যদি ভালো কোন অপশন নিশ্চিতভাবে থাকে তবে এই ব্যাংকে জয়েন না করাই অতি উত্তম সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করি।